Skip to main content

আধ্যাত্মিকতার উদ্দেশ্যে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে হানাফি মাযহাবের অবস্থান

আধ্যাত্মিকতার উদ্দেশ্যে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে হানাফি মাযহাবের অবস্থান

হানাফি মাযহাবের প্রামাণ্য গ্রন্থ ‘রদ্দুল মুহতার’ এ ইমাম ইবনে আবেদীন রহিমাহুল্লাহ (১২৫২ হি.) বলেন :


وهذا يفيد أن آلة اللهو ليست محرمة لعينها ، بل لقصد اللهو منها ، إما من سامعها ، أو من المشتغل بها ، وبه تُشعر الإضافة ، ألا ترى أن ضرب تلك الآلة بعينها حل تارة وحرم أخرى باختلاف النية بسماعها ، والأمور بمقاصدها ، وفيه دليل لساداتنا الصوفية الذين يقصدون أمورا هم أعلم بها ، فلا يبادر المعترض بالإنكار كي لا يُحرَم بركتهم ، فإنهم السادة الأخيار أمدنا الله تعالى بإمداداتهم ، وأعاد علينا من صالح دعواتهم وبركاتهم


“এর মাধ্যমে বোঝা গেল, বিনোদনের বাদ্যযন্ত্র স্বয়ং হারাম নয়। বরং বিনোদনের উদ্দেশ্যে যদি শ্রোতা কিংবা চর্চাকারী এটা করে, তখন হবে। বাদ্যযন্ত্র শব্দের সাথে বিনোদন শব্দ যোগ করা থেকে এর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তুমি কি দেখছ না যে এই বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা কোন কোন ক্ষেত্রে হালাল হচ্ছে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে হারাম হচ্ছে বাদ্য শ্রবণের ভিন্নতার কারণে? মূলত সকল কাজ বিবেচ্য তার লক্ষ্য অনুযায়ী। সুতরাং এতে আমাদের সুফি মাশায়েখদের জন্য দলিল আছে। তারা বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে যে লক্ষ্য অর্জন করতে চান সে সম্পর্কে তারাই সবার চেয়ে ভাল জানেন। তাই কেউ তাদের বিরুদ্ধে যেন আপত্তি তুলে তাদের বরকত থেকে বঞ্চিত না হয়। তারা হলেন শ্রেষ্ঠ ও মহান ব্যাক্তিত্ব। আল্লাহ তাদের এমদাদ দ্বারা আমাদেরকেও মদদ করুন। তাদের নেক দোয়া ও বরকত দ্বারা আমাদেরকেও উপকৃত করুন।” 


সুত্র : রদ্দুল মুহতার, ৬/৩৫০, দারুল ফিকর, বৈরুত।


কাসানী (৫৮৭ হি.) তার বাদাই’উস সানাই’-তে বলেন,


ويَجُوزُ بَيْعُ آلاتِ المَلاهِي مِن البَرْبَطِ، والطَّبْلِ، والمِزْمارِ، والدُّفِّ، ونَحْوِ ذَلِكَ عِنْدَ أبِي حَنِيفَةَ لَكِنَّهُ يُكْرَهُ وعِنْدَ أبِي يُوسُفَ، ومُحَمَّدٍ: لا يَنْعَقِدُ بَيْعُ هَذِهِ الأشْياءِ؛ لِأنَّها آلاتٌ مُعَدَّةٌ لِلتَّلَهِّي بِها مَوْضُوعَةٌ لِلْفِسْقِ، والفَسادِ فَلا تَكُونُ أمْوالًا فَلا يَجُوزُ بَيْعُها ولِأبِي حَنِيفَةَ  أنَّهُ يُمْكِنُ الِانْتِفاعُ بِها شَرْعًا مِن جِهَةٍ أُخْرى


“ইমাম আবু হানীফার মতে, বরবত, তবলা, বাঁশি, দফ ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র কেনাবেচা জায়েয, তবে অপছন্দনীয়। কিন্তু আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদের নিকট এগুলো কেনাবেচা আইনী ভাবে শুদ্ধ নয়। কেননা এগুলো পাপাচার, বিশৃংখলার কাজে বিনোদন লাভের উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে। সুতরাং একে সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। তাই কেনাবেচা অবৈধ। কিন্তু আবু হানীফা বলেন, শরয়ীসম্মত উপায়ে বাদ্যযন্ত্র থেকে উপকৃত হওয়া সম্ভব।”


সুত্র : বাদাই’উস সানাই’, ৫/১৪৪, দারুল কুতুব আল ইলমিয়্যাহ।


Comments

Popular posts from this blog

মিউজিকের বিপক্ষে প্রচলিত কিছু হাদীসের জবাব।

নিচের লেখাটি আমার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহপাঠীর সাথে হয়েছিল, তাই “তুমি” সম্বোধন ব্যবহার করেছি। প্রথমে আবু উমামার হাদীস নিয়ে কথা বলা যাক। হাদীস ১: তুমি নিচের হাদিসটি উল্লেখ করেছ। عَنْ أَبِيْ اُمَامَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم لاَ تَبِيْعُوا الْقَيْنَاتِ وَلاَ تَشْتَرُوْهُنَّ وَلاَ تُعَلِّمُوْهُنَّ وَثَمَنُهُنَّ حَرَامٌ. আবু ওমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা গায়িকা নর্তকীদের বিক্রয় কর না, তাদের ক্রয় কর না, তাদের গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র শিখিয়ে দিয়ো না, তাদের উপার্জন হারাম’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/২৭৮০)। উত্তর : - এই হাদীস দয়ীফ জিদ্দান (অতি দূর্বল), এমন হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণ দেয়া জায়েয নয়। মিশকাতে এই হাদীস উল্লেখ করে গ্রন্থকার বলেন: رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَعلي بن يزِيد الرواي يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ “হাদীসটি আহমদ, তিরমিযি ও ইবনে মাজাহ বর্ণনা করেছেন। তিরমিযি বলেছেন — এটি গরীর (একক সুত্রে বর্ণিত) হাদীস। আর বর্ণনাকারী আলী বিন ইয়াযীদ হাদীসে ...