Skip to main content

Posts

বিয়ে কি দ্বীনের অর্ধেক?

আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একটি হাদিস বর্ণনা করা হয়ে থাকে যে, বিয়ে করা দ্বীনের অর্ধেক। কিন্তু হাদিসটি কি আসলেই গ্রহণযোগ্য? হাদিসের বর্ণনাটি এমন - ইয়াযিদ আর রাক্কাশীর সুত্রে আনাস বিন মালেক থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ বলেছেন, إذا تزوج العبد فقد كمل نصف الدين، فليتق الله في النصف الباقي "যে ব্যক্তি বিয়ে করল সে তার ধর্মের অর্ধাংশ পূরণ (সুরক্ষিত) করল, অতএব বাকি অর্ধাংশের বিষয়ে যেন সে আল্লাহকে ভয় করে।" তাবারানির আল মুজামুল আওসাত ও ইবনুল জাওযির আল ইলালুল মুতানাহিয়াতে এই সুত্রে হাদিসটি এসেছে। ভিন্ন আরেকটি সুত্রেও হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে এই শব্দগুলোর মাধ্যমে – من رزقه الله امرأة صالحة، فقد أعانه على شطر دينه، فليتق الله في الشطر الثاني "আল্লাহ যাকে নেককার স্ত্রী দান করে তার অর্ধেক দ্বীনের ব্যাপারে তিনি সহায়তা করেছেন, সুতরাং বাকি অর্ধেকের ব্যাপারে যেন সে আল্লাহকে ভয় করে" হাকেম তার মুস্তাদরাকে এবং বায়হাকি তার শু'আবুল ঈমানে এটি তাখরিজ করেছেন। সনদের বিচারে দেখা যায় যে, উভয় বর্ণনাই মুনকার বা আপত্তিকর। কারণ প্রথম সুত্রে রয়েছে ইয়াযিদ আর রাক্কাশী। আর দ্বিতীয় সুত...
Recent posts

হালাল স্পষ্ট, হারাম স্পষ্ট, তাহলে সংশয় কোথায়?

হালাল স্পষ্ট, হারাম স্পষ্ট, তাহলে সংশয় কোথায়? সংশয়পূর্ণ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিসকে অনেকেই ভুল বোঝেন। অনেকেই একে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে মানুষকে সবকিছু বিসর্জন দিয়ে সন্ন্যাসবাদের পথ গ্রহণ করার আহ্বান করে, এবং একে জাস্টিফাই করার প্রয়াস পায়। আজকে আমরা এই হাদিসটির সঠিক ব্যাখ্যা উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ্‌। নবিজি এরশাদ করেছেন : إِنَّ الْحَلَالَ بَيِّنٌ، والْحَرَامَ بَيِّنٌ، وبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ لَا يَعْلَمُهُنَّ كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ، فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ فَقَدِ اسْتَبْرَأَ لِدِينِهِ، وعِرْضِهِ، ومَنْ وقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ وقَعَ فِي الْحَرَامِ “নিশ্চয়ই হালাল স্পষ্ট। হারামও স্পষ্ট। এই দুয়ের মাঝে রয়েছে সন্দেহপূর্ণ বিষয় যার বিধান অধিকাংশ মানুষই জানেনা। এমতাবস্থায় কেউ যদি সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকে, তবে সে নিজের ধর্ম ও মানসম্মানকে দায়মুক্ত থাকতে পারবে। কিন্তু যদি সে সংশয়পূর্ণ বিষয়ে লিপ্ত হয়, তবে সে হারামে লিপ্ত হয়ে যাবে।” কয়েকটি পয়েন্টে স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন। এই হাদিসটি দ্বীনী জ্ঞানে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য নয়। এটা সেসব...

গানবাদ্য বিষয়ে কিছু লেখা

১. মিউজিকের বিপক্ষে প্রচলিত কিছু হাদীসের জবাব। https://sheiksadi.blogspot.com/2022/01/blog-post_61.html ২. রাসুলের যুগে সাহাবিদের গানবাদ্য https://sheiksadi.blogspot.com/2022/01/blog-post_18.html ৩. বাদ্যযন্ত্র হারাম হওয়ার মতটি কীভাবে মুসলিম বিশ্বে প্রচার-প্রসার পেল? https://sheiksadi.blogspot.com/2022/01/blog-post_79.html ৪. মাজিশুন পরিবার ও মদীনায় গানবাদ্য https://sheiksadi.blogspot.com/2022/01/blog-post_51.html ৫. সঙ্গীত ও বাদ্য ব্যবহার জায়েয — কাযি আবু বকর ইবনুল আরাবি। https://sheiksadi.blogspot.com/2022/01/blog-post_42.html ৬. বাদ্যযন্ত্র ও ইজমা https://sheiksadi.blogspot.com/2022/01/blog-post_60.html ৭. ইসলামী জীবনদর্শনের আলোকে সঙ্গীত : শায়খ মাহমুদ শালতুত। https://sheiksadi.blogspot.com/2022/01/blog-post_33.html ৮. ইসলামের স্বর্ণযুগে সঙ্গীতচর্চা — ইসহাক আন-নাদীম ও উলাইয়্যা বিনতে মাহদী https://sheiksadi.blogspot.com/2022/01/blog-post_31.html ৯. নারীকণ্ঠে গান শোনা https://sheiksadi.blogspot.com/2022/01/blog-post_50.html ১০. সঙ্গীতচর্চার গুরুত...

মিউজিকের বিপক্ষে প্রচলিত কিছু হাদীসের জবাব।

নিচের লেখাটি আমার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহপাঠীর সাথে হয়েছিল, তাই “তুমি” সম্বোধন ব্যবহার করেছি। প্রথমে আবু উমামার হাদীস নিয়ে কথা বলা যাক। হাদীস ১: তুমি নিচের হাদিসটি উল্লেখ করেছ। عَنْ أَبِيْ اُمَامَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم لاَ تَبِيْعُوا الْقَيْنَاتِ وَلاَ تَشْتَرُوْهُنَّ وَلاَ تُعَلِّمُوْهُنَّ وَثَمَنُهُنَّ حَرَامٌ. আবু ওমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা গায়িকা নর্তকীদের বিক্রয় কর না, তাদের ক্রয় কর না, তাদের গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র শিখিয়ে দিয়ো না, তাদের উপার্জন হারাম’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/২৭৮০)। উত্তর : - এই হাদীস দয়ীফ জিদ্দান (অতি দূর্বল), এমন হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণ দেয়া জায়েয নয়। মিশকাতে এই হাদীস উল্লেখ করে গ্রন্থকার বলেন: رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَعلي بن يزِيد الرواي يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ “হাদীসটি আহমদ, তিরমিযি ও ইবনে মাজাহ বর্ণনা করেছেন। তিরমিযি বলেছেন — এটি গরীর (একক সুত্রে বর্ণিত) হাদীস। আর বর্ণনাকারী আলী বিন ইয়াযীদ হাদীসে ...

আধ্যাত্মিকতার উদ্দেশ্যে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে হানাফি মাযহাবের অবস্থান

আধ্যাত্মিকতার উদ্দেশ্যে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে হানাফি মাযহাবের অবস্থান হানাফি মাযহাবের প্রামাণ্য গ্রন্থ ‘রদ্দুল মুহতার’ এ ইমাম ইবনে আবেদীন রহিমাহুল্লাহ (১২৫২ হি.) বলেন   : وهذا يفيد أن آلة اللهو ليست محرمة لعينها ، بل لقصد اللهو منها ، إما من سامعها ، أو من المشتغل بها ، وبه تُشعر الإضافة ، ألا ترى أن ضرب تلك الآلة بعينها حل تارة وحرم أخرى باختلاف النية بسماعها ، والأمور بمقاصدها ، وفيه دليل لساداتنا الصوفية الذين يقصدون أمورا هم أعلم بها ، فلا يبادر المعترض بالإنكار كي لا يُحرَم بركتهم ، فإنهم السادة الأخيار أمدنا الله تعالى بإمداداتهم ، وأعاد علينا من صالح دعواتهم وبركاتهم “এর মাধ্যমে বোঝা গেল, বিনোদনের বাদ্যযন্ত্র স্বয়ং হারাম নয়। বরং বিনোদনের উদ্দেশ্যে যদি শ্রোতা কিংবা চর্চাকারী এটা করে, তখন হবে। বাদ্যযন্ত্র শব্দের সাথে বিনোদন শব্দ যোগ করা থেকে এর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তুমি কি দেখছ না যে এই বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা কোন কোন ক্ষেত্রে হালাল হচ্ছে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে হারাম হচ্ছে বাদ্য শ্রবণের ভিন্ন...